১ দিনে রাঙামাটি ভ্রমণ

১ দিনে রাঙামাটি ভ্রমণ ....................... জ্বি ঠিকই দেখেছেন................ ১ দিনেই ঘুরে এসেছি কাপ্তাই লেক। দুইজন গিয়েছিলাম খরচ হয়েছিল মাত্র ৪৬৮০ টাকা। 

যাত্রা: ১লা ডিসেম্বর রাত ১০:৩০ মিনিটের ইউনিক বাস (ফকিরাপুল থেকে)। ভোর ৫ টার দিকে গিয়ে পৌছোলাম দোয়েলচত্বর ওইখানে অপেক্ষা করলাম সকাল হওয়া পর্যন্ত সকালের নাস্তা টা ওইখানেই সেরে ফেললাম, তারপর এইদিক ওইদিক একটু হাটাহাটি করে শহরটা একটু দেখলাম, তারপর চলে গেলাম রিসার্ভ বাজার ওইখান থেকে ঠিক করলাম ট্রলার সারাদিনের জন্য, গেলাম ৬টা স্থানে।
সুবলং ঝর্না 
স্থান গুলি:
*সুবলং ঝর্না
*ছোট ঝর্না
*নির্মান মন্দির
*আদিবাসী গ্রাম
*ঝুলন্ত ব্রিজ
*তান্যাবি রেস্টুরেন্ট
.
.





এইখানে বলে রাখা ভালো যে বর্ষার সিজন ছাড়া সুবলং ঝর্নায় পানি থাকে না. (আর্মিরা নাকি উপর থেকে পানি আটকে রেখে সেই পানি তারা ব্যবহার করে) তবে ছোট ঝর্নায় সবসময় পানি থাকে (কম আর বেশি) এছাড়া নির্মান মন্দির আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে কারণ নির্মান মন্দিরে যেতে আপনাকে কমপক্ষে ৮তলা বাড়ির সমান একটি পাহাড়ে উঠতে হবে। যেটা আমার অনেক পছন্দ। এরপর আসি আদিবাসী গ্রামে, এইখানে আপনি পাহাড়ি আদিবাসীদের হাতে বানানো অনেক রকমের জামা কাপড় পাবেন যেমন শাল, আদিবাসী মেয়েদের জামা, পাঞ্জাবী যদিও সব হাতে বানানো না। ওদের শাল গুলো আমার সবথেকে বেশি পছন্দ হয়েছিল তাই ৩টা কিনে নিয়েছিলাম 

Suvolong False
সুবলং ঝর্না 

এছাড়া আপনি চাইলে ওদের পুরো গ্রাম ঘুরে দেখতে পারেন। তবে গ্রামের বাইরে যাওয়া নিষেধ কারন হিসেবে জানতে চাইলে বলে বণ্য প্রানির ভয় আছে তাই ওনারা কাওকে গ্রামের বাইরে যেতে দেয় না। আদিবাসী গ্রাম দেখতে দেখতে আশাকরি দুপুর হয়ে যাবে তারপর চলে যাবেন কোনা ১টি রেস্তোরাঁয় ওইখানে অনেক রেস্তরাঁ আছে যেমন তান্যাবি রেস্টুরেন্ট, পেদা টিং টিং, মেজাং এইরকম তবে আমরা গিয়েছিলাম তান্যাবি রেস্টুরেন্টে ওইখানের পরিবেশটা ছিলো অসাধারণ পুরো রেস্টুরেন্ট টা ১টা দ্বিপের উপর খাওয়া দাওয়ার পর চাইলে ওইখানে একটু গা হেলিয়ে দিতে পারবেন কিছুক্ষনের জন্য। 
ছোট ঝর্না
এরপর সবশেষে গিয়েছি ঝুলন্ত ব্রিজে সত্যি কথা বলতে ঝুলন্ত ব্রিজটি আমার কাছে তেমন ভালো লাগেনি তবে আপনাদের কারোও যে ভালো লাগবেনা এমন বলছি না, সবার টেস্ট আলাদা। ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে দেখতে আশাকরি বিকেল শেষ হয়ে যাবে, এরপর আবার চলে আসবেন রিসার্ভ বাজার, এইখানে বেশ কয়েকটি শুটকির দোকান আছে মোটামুটি কম দামেই চাইলে কিছু শুটকি কিনে নিতে পারেন। 
নির্মান মন্দির
তারপর আশেপাশে কিছুক্ষন ঘুরে রিসার্ভ বাজারের কাছেই বাসের কাউন্টার ওইখান থেকে ইউনিক বাস ২টা ছাড়ে ১টি রাত ৮টায় আরেকটি রাত ৮:৩০ মিনিটে যেকোনো ১টি বাসে উঠে পড়ুন, ঢাকায় আসতে আসতে ভোর ৫টার মতো বাজবে তো আপনি চাইলে পরেরদিন আপনার অফিসে অনায়াসে জয়েন করতে পারবেন। (আমিও এমন করেছি)
ঝুলন্ত ব্রিজ
এবার আসি খরচে....
ঢাকা টু রাঙামাটি বাসের টিকেট ১জনের ৬২০ টাকা করে দুই জনের ১২৪০ টাকা
অইখানে সকালের নাস্তা দুইজনের ১৩০ টাকা
তারপর দোয়েল চত্তর থেকে রিসার্ভ বাজার অটো ভাড়া (লোকাল) ১০ টাকা করে ২০ টাকা
তারপর ওইখান থেকে ট্রলার ভাড়া সারাদিনের জন্য ১৩০০ টাকা (আমাদের ট্রলার টি অনেক বড় ছিলো ১টা ১৫ জনের গ্রুপ অনায়াসে যেতে পারবেন...)
এরপর দুপুরের খাবারে খেয়েছিলাম ব্যাম্বু চিকেন, ভাত, ডাল, পাহাড়ি সালাদ খরচ হয়েছিল ৫০০ টাকা (ড্রাইভার সহ)
আদিবাসী গ্রাম
এছাড়া সুবলং ঝর্না দেখতে টিকেট কিনতে হবে ১৫ টাকা করে জন প্রতি, ঝুলন্ত ব্রিজে ২০ টাকা করে টিকেট জন প্রতি এবং বোট পার্কিং এর জন্য ৩০টাকা
এরপর রাঙামাটি টু ঢাকা ইউনিক বাসের টিকেট ১জনের ৬২০ টাকা করে দুই জনের ১২৪০ টাকা
মাঝখানে রাত ১২ টা বা ১২:৩০ এর দিকে কুমিল্লায় এসে ব্রেক দিবে চাইলে ওইখান থেকে রাতের খাওয়া দাওয়া করে ফেলতে পারেন, আমাদের রাতের খাবারে খরচ হয়েছিল ১৫০ টাকা (খুবই কম খেয়েছিলাম দুইজনই)
টোটাল ৪৬৮০/=

বিঃ দ্রঃ ওইখানে অনেক জায়গায় দেখেছি প্লাস্টিক পরে আছে। যারা যাবেন দয়া করে নিজেদের ময়লা গুলো নিজেরা সংগে করে নিয়ে আসবেন। দেশটা আমাদের এবং দেশেটা রক্ষা করার দায়িত্তও আমাদের।
এবং বোটে ওঠার আগে পানি কিনে নিয়ে তারপর উঠবেন।
Previous
Next Post »

Popular Posts